প্রশিক্ষণের মাস : রামাযান
লিলবর আল-বারাদী
মুখতারুল ইসলাম 9716 বার পঠিত
(ঙ) মাসীহ মাওঊদ তথা প্রতিশ্রুত মাসীহ সম্পর্কে আক্বীদা :
মুহাম্মাদ (ছাঃ) মাসীহ সম্পর্কে যে ভবিষ্যদ্বাণী করে গেছেন, সেই মোতাবেক মির্যা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানীই হ’ল প্রকৃত মাসীহ মাওঊদ। কাজেই সাধারণভাবে সকল মানবজাতি এবং বিশেষ করে মুসলমানদের কর্তব্য হ’ল তার অনুসরণ করা এবং তার প্রতি বিশ্বাস রাখা। নাঊযুবিল্লাহ।
এ সম্পর্কে তাদের ভ্রান্ত আক্বীদাগুলি নিম্নরূপ :
১.
ভন্ডনবী কাদিয়ানী বলে, আমি ঐ আল্লাহর শপথ করছি যিনি আমাকে প্রেরণ করেছেন
এবং ঐ আল্লাহর শপথ যার উপর অভিশপ্তগণ ব্যতীত আর কেউই অপবাদ রটায় না। তিনি
আমাকে প্রেরণ করেছেন এবং আমাকে প্রতিশ্রুত মাসীহ বানিয়েছেন (গোলাম আহমাদ কাদিয়ানীর ঘোষণাবলীর সমষ্টি, ১০ম খন্ড, ১৮ পৃ.)।[1]
২.
সে বলে, আমার দাবী হ’ল, আমি ঐ প্রতিশ্রুত মাসীহ যার সম্পর্কে সমুদয় আসমানী
কিতাবে সংবাদ দেওয়া হয়েছে যে, তিনি শেষ যামানায় আত্মপ্রকাশ করবেন।[2]
৩.
সে আরও বলেছে, তোমরা বিশ্বাস কর যে, আমিই ঐ মারইয়াম পুত্র ঈসা যিনি
অবতীর্ণ হয়েছিলেন। আর আমি কোন আধ্যাত্মিক শিক্ষক পাইনি। এটাই আমার এবং
মারইয়াম পুত্র ঈসার মধ্যকার সামঞ্জস্য, যিনি পিতাবিহীন জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
যেমন আমি আধ্যাত্মিক পিতা বিহীন জন্মগ্রহণ করেছি (‘ইযালাতুল আওহাম’ ৬৫৯ পৃ.)। [3]
৪.
অন্যত্র সে বলেছে, বড় বড় ওলীগণের কাশফ এ কথার উপর একমত যে, মাসীহ চতুর্দশ
শতাব্দীর পূর্বে অথবা চতুর্দশ শতাব্দীর প্রথমভাগে আত্মপ্রকাশ করবেন। এ সময়
অতিক্রান্ত হবে না। এটা স্পষ্ট কথা যে, চতুর্দশ শতাব্দীতে আমি ব্যতীত আর
কেউই এ পদের জন্য ঘোষণা দেয়নি। এ জন্য আমিই প্রতিশ্রুত মাসীহ (তার দাবীর
পক্ষে কি আশ্চর্য ধরনের প্রমাণ!) (গোলাম কাদিয়ানীর ‘এযালাতুল আওহাম' ৬৮৫ পৃ.)। [4]
৫.
অন্যত্র সে বলেছে, ‘আমি এ দাবী করিনি যে, আমি প্রতিশ্রুত মাসীহ এবং আমার
পরে কোন মাসীহ আসবেন না; বরং আমি বিশ্বাস করি এবং একথা বার বার বলছি যে,
আমার পরে এক মাসীহ নয় বরং হাযার হাযার মাসীহের আগমন ঘটতে পারে’ (গোলামের ‘ইযালাতুল আওহাম’ ২৯৬ পৃ.)।[5]
পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন
শায়খ
ইহসান ইলাহী যহীর বলেন, এ ধরনের দিশেহারা আচরণ ও পদস্খলন দ্বারা
কাদিয়ানীদের উদ্দেশ্য হ’ল সরলমনা মুসলমানদের প্রতারিত করা। গোলাম আহমাদ এমন
ব্যক্তি যার অন্তঃসারশূন্য সস্তা দাবীদাওয়ার প্রতি দৃষ্টিপাত করাও অন্যায়।
তার পরস্পরবিরোধী উক্তিসমূহই তার দাবীদাওয়াকে মিথ্যা প্রমাণিত করার জন্য
যথেষ্ট।[6]
কিন্তু এতদসত্ত্বেও আমরা এ ব্যাপারে তার আনুমানভিত্তিক মিথ্যা প্রলাপ ও অমূলক উক্তিসমূহ উল্লেখ করে একটা জ্ঞান সম্মত আলোচনা করতে চাই। যাতে আমরা প্রত্যেক সন্দেহ পোষণকারী ও সুযোগ সন্ধানীর মিথ্যাচারের মূলোৎপাটন করতে পারি। এতে সন্দেহ নেই যে, রাসূল (ছাঃ) প্রতিশ্রুত মাসীহের আগমনের সংবাদ দিয়েছেন এবং তাঁর গুণাবলী ও ব্যক্তিত্বকে সুস্পষ্ট করে বর্ণনা করে দিয়েছেন। যাতে শয়তান তার অনুসারীদেরকে নিয়ে খেলা করতে না পারে।[7]
১.
রাসূল (ছা.) প্রতিশ্রুত মাসীহের গুণাবলী তুলে ধরে বলেন, وَالَّذِى نَفْسِى
بِيَدِهِ، لَيُوشِكَنَّ أَنْ يَنْزِلَ فِيكُمُ ابْنُ مَرْيَمَ حَكَمًا
عَدْلاً، فَيَكْسِرَ الصَّلِيبَ، وَيَقْتُلَ الْخِنْزِيرَ ، وَيَضَعَ
الْجِزْيَةَ، وَيَفِيضَ الْمَالُ حَتَّى لاَ يَقْبَلَهُ أَحَدٌ، حَتَّى
تَكُونَ السَّجْدَةُ الْوَاحِدَةُ خَيْرًا مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا-
অর্থাৎ ঐ আল্লাহর শপথ যার হাতে আমার প্রাণ! অচিরেই মারইয়াম পুত্র
ন্যায়বিচারক শাসকরূপে তোমাদের মধ্যে অবতরণ করবেন। তিনি ক্রুশ চূর্ণ-বিচূর্ণ
করবেন এবং শুকর হত্যা করবেন। তিনি যুদ্ধ রহিত করবেন এবং ধন-সম্পদ এত অধিক
হবে যে কেউই তা গ্রহণ করবে না। এমনকি তখন একটি মাত্র সিজদা পৃথিবী ও তার
মাঝে যা কিছু আছে তা থেকে উত্তম হবে।[8]
২. রাসূল (ছা.) বলেন, إِذْ بَعَثَ اللَّهُ الْمَسِيحَ ابْنَ مَرْيَمَ فَيَنْزِلُ عِنْدَ الْمَنَارَةِ الْبَيْضَاءِ شَرْقِىَّ دِمَشْقَ بَيْنَ مَهْرُودَتَيْنِ وَاضِعًا كَفَّيْهِ عَلَى أَجْنِحَةِ مَلَكَيْنِ إِذَا طَأْطَأَ رَأَسَهُ قَطَرَ وَإِذَا رَفَعَهُ تَحَدَّرَ مِنْهُ جُمَانٌ كَاللُّؤْلُؤِ فَلاَ يَحِلُّ لِكَافِرٍ يَجِدُ رِيحَ نَفَسِهِ إِلاَّ مَاتَ وَنَفَسُهُ
يَنْتَهِى حَيْثُ يَنْتَهِى طَرْفُهُ فَيَطْلُبُهُ
حَتَّى يُدْرِكَهُ بِبَابِ لُدٍّ فَيَقْتُلُهُ ‘মারইয়াম পুত্র মাসীহকে যখন
আল্লাহ তা'আলা পাঠাবেন, তখন তিনি দামেশকের পূর্ব প্রান্তের সাদা মিনারের
নিকট দু’টি হলুদ বর্ণের চাদর পরিধান করে এবং দু’জন ফেরেশতার ডানার উপর হাত
দু’টি রেখে অবতরণ করবেন। যখন তিনি মাথা ঝুঁকাবেন তখন ফোঁটা ফোঁটা ঘাম তাঁর
শরীর থেকে গড়িয়ে পড়বে। যখন মাথা উঠাবেন তখন তা থেকে মুক্তা ঝরবে। কোন কাফের
তাঁর নিঃশ্বাসের গন্ধ পেলেই মৃত্যুবরণ করবে। তাঁর দৃষ্টি যত দূর পর্যন্ত
যায় তত দূর পর্যন্ত তার নিঃশ্বাসও পৌঁছাবে। তিনি দাজ্জালকে সন্ধান করতে
থাকবেন। অবশেষে দাজ্জালকে ধাওয়া করে ‘লুদ’ নামক প্রবেশ দ্বারে হত্যা
করবেন’।[9]
৩. রাসূল
(ছা.) অন্যত্র বলেন, وَالَّذِى نَفْسِى بِيَدِهِ لَيُهِلَّنَّ ابْنُ
مَرْيَمَ بِفَجِّ الرَّوْحَاءِ حَاجًّا أَوْ مُعْتَمِرًا أَوْ
لَيَثْنِيَنَّهُمَا অর্থাৎ ঐ আল্লাহর কসম যার হাতে আমার প্রাণ, ইবনে
মারইয়াম ‘রাওহা’ নামক স্থান অতিক্রমকালে পথিমধ্যে হজ্জ অথবা ওমরা কিংবা
উভয়টির অবস্থায় আবির্ভূত হবেন।[10]
৪.
রাসূল (ছা.) অন্যত্র বলেন, الأَنْبِيَاءُ إِخْوَةٌ لِعَلاَّتٍ
أُمَّهَاتُهُمْ شَتَّى وَدِينُهُمْ وَاحِدٌ وَأَنَا أَوْلَى النَّاسِ
بِعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ لأَنَّهُ لَمْ يَكُنْ بَيْنِى وَبَيْنَهُ نَبِىٌّ
وَإِنَّهُ نَازِلٌ فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُ فَاعْرِفُوهُ رَجُلاً مَرْبُوعاً
إِلَى الْحُمْرَةِ وَالْبَيَاضِ عَلَيْهِ ثَوْبَانِ مُمَصَّرَانِ كَأَنَّ
رَأْسَهُ يَقْطِرُ وَإِنْ لَمْ يُصِبْهُ بَلَلٌ فَيَدُقُّ الصَّلِيبَ
وَيَقْتُلُ الْخِنْزِيرَ وَيَضَعُ الْجِزْيَةَ وَيَدْعُو النَّاسَ إِلَى
الإِسْلاَمِ فَيُهْلِكُ اللَّهُ فِى زَمَانِهِ الْمِلَلَ كُلَّهَا إِلاَّ
الإِسْلاَمَ وَيُهْلِكُ اللَّهُ فِى زَمَانِهِ الْمَسِيحَ الدَّجَّالَ
وَتَقَعُ الأَمَنَةُ عَلَى الأَرْضِ حَتَّى تَرْتَعَ الأُسُودُ مَعَ
الإِبِلِ وَالنِّمَارُ مَعَ الْبَقَرِ وَالذِّئَابُ مَعَ الْغَنَمِ
وَيَلْعَبَ الصِّبْيَانُ بِالْحَيَّاتِ لاَ تَضُرُّهُمْ فَيَمْكُثُ
أَرْبَعِينَ سَنَةً ثُمَّ يُتَوَفَّى وَيُصَلِّى عَلَيْهِ الْمُسْلِمُونَ-
অর্থাৎ নবীগণ একে অন্যের বৈমাত্রেয় ভাই। তাঁদের মা ভিন্ন ভিন্ন কিন্তু
দ্বীন হ’ল এক। আমি মারইয়াম পুত্র ঈসা (আ.)-এর অধিকতর নিকটবর্তী। কারণ তাঁর ও
আমার মাঝখানে আর কোন নবী নেই এবং অবশ্যই তিনি অবতরণ করবেন। যখন তোমরা
তাঁকে এ সকল লক্ষণ দ্বারা চিনে নিবে; তিনি মধ্যম অবয়ব বিশিষ্ট ও লাল
মিশ্রিত সাদা রঙ্গের হবেন। তাঁর মাথা থেকে যেন ফোটা ফোটা হয়ে পানি পড়বে,
যদিও তাতে পানি লাগেনি। তিনি ক্রুশ চূর্ণ-বিচূর্ণ করবেন এবং জনগণকে ইসলামের
দিকে আহবান জানাবেন। তাঁর সময়েই আল্লাহ পাক মাসীহ দাজ্জালকে ধ্বংস করবেন।
পৃথিবীতে নিরাপত্তা বিরাজ করবে। এমনকি উটের সহিত বাঘ, গরুর সহিত চিতাবাঘ
এবং বকরীর সহিত নেকড়ে বাঘ বিচরণ করবে। শিশুরা সাপ নিয়ে খেলা করবে অথচ ওরা
তাদের কোন ক্ষতি করবে না। তিনি পৃথিবীতে চল্লিশ বৎসর কাল অবস্থান করবেন।
অতঃপর তিনি মৃত্যুবরণ করবেন এবং মুসলমানগণ তাঁর জানাজার নামাজ পড়ে তাঁকে
দাফন করবেন।[11]
৫. রাসূল (ছা.) আরো বলেন, يَنْزِلُ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ إِلَى الْأَرْضِ، فَيَتَزَوَّجُ، وَيُولَدُ لَهُ، وَيَمْكُثُ خَمْسًا وَأَرْبَعِينَ سَنَةً، ثُمَّ يَمُوتُ، فَيُدْفَنُ مَعِي فِي قَبْرِي، فَأَقُومُ أَنَا وَعِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ فِي قَبْرٍ وَاحِدٍ بَيْنَ أَبَى بَكْرٍ وَعُمَرَ-
অর্থাৎ
মারইয়াম পুত্র ঈসা (আ.) পৃথিবীতে অবতরণ করবেন, তারপর তিনি বিবাহ করবেন এবং
তার সন্তান-সন্ততিও হবে। ৪৫ বছর পৃথিবীতে অবস্থান করবে। অতঃপর তিনি
মৃত্যুবরণ করবেন এবং আমার সাথে আমার কবরেই তাঁকে দাফন করা হবে, আমার সাথেই
তাকে কবর দেওয়া হবে। আর আবু বকর (রা.), ওমর (রা.)-এর সাথে আমি ও ঈসা (আ.)
ক্বিয়ামতের মাঠে হাযির হব।[12]
ইহসান ইলাহী যহীর বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছা.) এ সমস্ত হাদীছে প্রতিশ্রুত মাসীহের গুণাবলি স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি কে হবেন? কোথা হ’তে আসবেন, কোথায় থাকবেন কেমন করে থাকবেন, তাঁর সময় কি কি সংঘটিত হবে, স্বয়ং তিনি কি করবেন, পৃথিবীতে কয়দিন অবস্থান করবেন এবং কোথায় সমাধিস্থ হবেন?-ইত্যাদি সবকিছু।[13] পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের পবিত্র ও সত্যবাণীর পরে আর কোন কথা থাকতে পারে না। তবুও গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী নির্লজ্জভাবে মিথ্যাচার করেছে। অথচ হাদীছের বর্ণনার সাথে তার বিন্দুমাত্র সামঞ্জস্য নেই।[14]
(চ) জিহাদ সম্পর্কে কাদিয়ানীদের আক্বীদা
শিরক-কুফর, ঈমান-তাগুত, হক ও বাতিলের দ্বন্দ্বে জিহাদ মুসলমাদের মূল প্রেরণা, যা তাদের বুনিয়াদী শক্তিস্থল। আর সেটিকে ধ্বংস করতে পারলেই সাম্রাজ্যবাদীদের বিজয় ঠেকায় কে? তাই তারা মুসলমানদের জিহাদী শক্তিকে মূলোৎপাটন করতে নিরন্তর কোশেশ করে। তারা তাদের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে বেছে নেয় ভন্ড কাদিয়ানী নবী গোলাম আহমাদ কাদিয়ানীর মত স্বার্থপরকে।
আল্লামা ইহসান ইলাহী যহীর বলেন, এটা প্রমাণিত সত্য যে, কাদিয়ানীর নবুঅত দাবীর পিছনে ইংরেজদের প্রত্যক্ষ হাত ছিল। এখান থেকে তাদের উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম শক্তিকে খর্ব করা এবং সাম্রাজ্যবাদীদের কাছে মুসলমানদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করা, আর জিহাদ রহিত করা। কেননা সাম্রাজ্যবাদীরা ইসলামের জিহাদের আক্বীদাকে সর্বাধিক ভয় করে। কারণ জিহাদের সাথে মুসলমানদের সম্পর্ক ও আন্তরিকতা সম্বন্ধে তারা অবগত। ক্রুসেডের যুদ্ধ চলাকালে তারা এ আক্বীদা থেকে নির্গত উক্ত দু'টি বিষয় ভালভাবেই আঁচ করতে পেরেছে। এজন্য ইংরেজ খ্রিষ্টান উপনিবেশবাদীরা তাদের নিয়োগকৃত মিথ্যা নবীকে মুসলমানদের অন্তর হ’তে এ বিশ্বাসের মূলোৎপাটন করতে এবং এখন থেকে ইসলামে জিহাদ নেই, এই নতুন আক্বীদা সৃষ্টি করতে নির্দেশ দেয়।[15]
এ সম্পর্কে তাদের ঈমান বিধ্বংসী আক্বীদাসমূহ নিম্নরূপ :
১.
মিথ্যাবাদী ভন্ডনবী বলে, ‘আল্লাহ তা‘আলা ধীরে ধীরে জিহাদের কঠোরতা হ্রাস
করে দিয়েছেন। মুসা (আ.)-এর যুগে শিশুদের হত্যা করা হ’ত এবং মুহাম্মদ
(ছাঃ)-এর যুগে শিশু, নারী ও বৃদ্ধদেরকে হত্যা করা রহিত করা হয়। অতঃপর আমার
যুগে জিহাদের হুকুমকে একেবারে রহিত করে দেয়া হয় (গোলাম আহমাদ কাদিয়ানীর ‘আরবাঈন’ ৪ নম্বর ১৫ পৃ.)।[16]
২.
সে আরও বলে যে, ‘আজ তরবারী দ্বারা জিহাদ রহিত হয়ে গেল, আজকের পর আর জিহাদ
নেই। অতএব যে ব্যক্তি কাফেরদের উপর অস্ত্রধারণ করবে এবং নিজেকে গাযী বলে
অভিহিত করবে, সে রাসূলুল্লাহ (ছা.)-এর বিরোধী বলে গণ্য হবে, যিনি তের
শতাব্দী পূর্বে ঘোষণা দিয়েছেন যে, মসীহে মাওঊদের সময় জেহাদ রহিত হয়ে যাবে।
সে আরও বলে আমিই মসীহে মাওঊদ। এখন আমার প্রকাশ পাওয়ার পর কোন জিহাদ নেই।
তাই আমরা সন্ধি ও নিরাপত্তার পতাকা উত্তোলন করব (‘আরবাঈন’ ৪৭ পৃ.)।[17]
৩.
সে আরো বলে, তোমরা এখন জিহাদের চিন্তা ছেড়ে দাও। কেননা ধর্মের জন্য যুদ্ধ
করা হারাম করে দেয়া হয়েছে। ইমাম মসীহ এসে গেছেন এবং আসমান থেকে আল্লাহর নূর
অবতীর্ণ হয়ে গেছে। সুতরাং জিহাদ আর নেই। বরং যে ব্যক্তি এখন আল্লাহর পথে
জিহাদ করবে, সে আল্লাহর শত্রু এবং নবীর আদেশ অমান্যকারী। (কাদিয়ানীর ‘তাবলীগে রেসালত’, ৪র্থ খন্ড ৪৯ পৃ.)।[18]
৪. কাদিয়ানী ম্যাগাজিন ‘রিভিউ অব রিলিজিউন্স’-এর সম্পাদক মুহাম্মাদ আলী[19]
লিখেছে, ইংরেজ সরকারের কর্তব্য হ’ল কাদিয়ানীদের অবস্থা অনুধাবন করা। কেননা
আমাদের ইমাম তার জীবনের বাইশটি বছর লোকজনকে শুধু এ শিক্ষা দিতে ব্যয়
করেছেন যে, জিহাদ হারাম এবং অকাট্য হারাম। শুধু ভারতেই তিনি এ শিক্ষা
প্রচার করে ক্ষান্ত হননি, বরং তা মুসলিম দেশ সমূহে যথা আরব, সিরিয়া,
আফগানিস্তান ইত্যাদি দেশে প্রচার করেছেন (‘রিভিউ অব রিলিজিউন্স’ ২নম্বর ১৯০৪ খ্রি.)। [20]
৫. ভন্ড কাদিয়ানী বলে, নিশ্চয়ই এ কাদিয়ানী সম্প্রদায় মুসলমানদের অন্তর থেকে জিহাদের অপবিত্র আক্বীদার মূলোৎপাটন করতে দিবারাত্রী চেষ্টা চালিয়ে যাবে (সরকারের প্রতি গোলাম আহমাদের আবেদনপত্র যা ‘রিভিউ অব রিলিজিউন্স’ অন্তর্ভুক্ত ৫ নম্বর ১৯২ খ্রি.)।
৬.
সে আরও স্পষ্ট করে বলছে, দীর্ঘ সতের বছর ধরে আমার অনবরত ভাষণের দ্বারা
প্রমাণিত হয়েছে যে, আমি মনে প্রাণে ইংরেজ সরকারের প্রতি বিশ্বস্ত ও
নিষ্ঠাবান। সরকারের আনুগত্য ও মানুষের ভালোবাসা হ’ল আমার বিশ্বাস। এটাই
আমার আক্বীদা, যা আমার অনুসারী ভক্তগণের জন্য বায়‘আতের শর্তাবলীর
অন্তর্ভুক্ত করেছি। আমি এ আক্বীদাকে বায়‘আতের শর্তাবলী সম্পর্কীয় পুস্তিকায়
চতুর্থ বিষয়ের আওতায় স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছি, যা আমার ভক্ত ও অনুসারীগণের
মধ্যে বিতরণ করা হয়ে থাকে (গোলাম কাদিয়ানীর 'যমীমাতু কিতাবুল বারিয়াহ' পরিশিষ্ট, ৯ পৃ.)। [21]
৪.
কাদিয়ানীদের খলীফা গোলাম আহমাদের পুত্র লিখেছে যে, মসীহে মাওঊদ (গোলাম)
ইংরেজ সরকারের প্রতি বিশ্বস্ততাকে বায়‘আতের শর্তাবলীর অন্তর্ভুক্ত করেছেন
এবং বলেছেন, যে ব্যক্তি সরকারকে অমান্য করবে এবং তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে
অংশগ্রহণ করবে এবং তার নির্দেশাবলী বাস্তবায়িত করবে না, সে আমাদের
জামা‘আতের অন্তর্ভুক্ত নয় (মাহমুদ আহমদ রচিত 'তুহফাতুল মুলূক' ১২৩ পৃ.)। [22]
পর্যালোচনা ও জবাব
কাদিয়ানীরা
যে সমস্ত ঘৃণ্য আক্বীদা পোষণ করে তন্মধ্যে জিহাদকে রহিত করার ঘৃণিত
আক্বীদা হ’ল অন্যতম। শায়খ বলেন, এ হ’ল তাদের জিহাদ ও বায়‘আতের নমুনা। মূলতঃ
গোলাম আহমাদ এগুলোর মাধ্যমে ইংরেজ প্রভুর খাঁটি বান্দা হ’তে চেয়েছে।
মোটকথা কাদিয়ানীদের আক্বীদা হ’ল কাফের ব্রিটিশ উপনিবেশবাদের বিশ্বস্ততা ও
ভালোবাসা পোষণ করা।[23]
আল্লাহ ইহসান ইলাহী যহীর গোলাম আহমাদের এই আক্বীদা রদ করে বলেন, মুসলমানদের জিহাদ শুধু এই যুগে নয় বরং ক্বিয়ামত পর্যন্ত বজায় থাকবে। কোন মিথ্যুক কাফের তা রদ করার ক্ষমতা রাখে না। বরং গোলাম আহমাদ শুধু আল্লাহ ও তদীয় রাসূলের প্রতি মিথ্যাচার করেছে মাত্র। যেমন-
১. রাসূল (ছাঃ)-কে প্রশ্ন করা হয়েছিল,
তিনি বলেন, أَىُّ النَّاسِ أَفْضَلُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله
عليه وسلم مُؤْمِنٌ يُجَاهِدُ فِى سَبِيلِ اللَّهِ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ.
قَالُوا ثُمَّ مَنْ قَالَ مُؤْمِنٌ فِى شِعْبٍ مِنَ الشِّعَابِ يَتَّقِى
اللَّهَ، وَيَدَعُ النَّاسَ مِنْ شَرِّهِ- ‘মানুষের মধ্যে কে উত্তম?
আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) বলেন, সেই মুমিন মুজাহিদ উত্তম, যে নিজ জান ও মাল দিয়ে
আল্লাহর পথে জিহাদ করে। ছাহাবীগণ বললেন, অতঃপর কে? তিনি বললেন, সেই মুমিন
আল্লাহর ভয়ে যে পাহাড়ে কোন গুহায় অবস্থান নেয় এবং স্বীয় অনিষ্ট থেকে
লোকদেরকে নিরাপদ রাখে’।[24]
২. বিশ্বস্ত সত্যবাদী আল্লাহর রাসূল বলেন, الْجِهَادُ أَفْضَلُ الْعَمَلِ ‘জিহাদ সর্বোত্তম আমল’।[25]
৩.
রাসূল (ছাঃ) বলেন, مَنْ آمَنَ بِاللَّهِ وَبِرَسُولِهِ وَأَقَامَ
الصَّلاَةَ وَصَامَ رَمَضَانَ ، كَانَ حَقًّا عَلَى اللَّهِ أَنْ
يُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ جَاهَدَ فِى سَبِيلِ اللَّهِ، أَوْ جَلَسَ فِى
أَرْضِهِ الَّتِى وُلِدَ فِيهَا. فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلاَ
نُبَشِّرُ النَّاسَ. قَالَ إِنَّ فِى الْجَنَّةِ مِائَةَ دَرَجَةٍ
أَعَدَّهَا اللَّهُ لِلْمُجَاهِدِينَ فِى سَبِيلِ اللَّهِ، مَا بَيْنَ
الدَّرَجَتَيْنِ كَمَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ، فَإِذَا سَأَلْتُمُ
اللَّهَ فَاسْأَلُوهُ الْفِرْدَوْسَ، فَإِنَّهُ أَوْسَطُ الْجَنَّةِ
وَأَعْلَى الْجَنَّةِ، أُرَاهُ فَوْقَهُ عَرْشُ الرَّحْمَنِ، وَمِنْهُ
تَفَجَّرُ أَنْهَارُ الْجَنَّةِ- ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি যে ঈমান
আনল, ছালাত আদায় করল, রামাযানের ছিয়াম রাখল, সে আল্লাহর পথে জিহাদ করুক
কিংবা স্বীয় জন্মভূমিতে বসে থাকুক, তাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া
আল্লাহর দায়িত্ব হয়ে যায়। ছাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি
লোকদের এ সুসংবাদ পোঁছে দেব না? তিনি বলেন, আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের জন্য
আল্লাহ তা‘আলা জান্নাতে একশ’টি মর্যাদার স্তর প্রস্ত্তত রেখেছেন। দু’টি
স্তরের ব্যবধান আসমান ও যমীনের দূরত্ব সমপরিমাণ। তোমরা আল্লাহর কাছে চাইলে
ফেরদাউস চাইবে। কেননা এটাই হ’ল সবচেয়ে উত্তম ও সর্বোচ্চ জান্নাত। আমার মনে
হয়, রাসূল (ছাঃ) এও বলেছেন, এর উপরে রয়েছে রহমানের আরশ। আর সেখান থেকে
জান্নাতের নহরসমূহ প্রবাহিত হচ্ছে।[26]
৪. তিনি আরও বলেছেন, لَرَوْحَةٌ فِى سَبِيلِ اللَّهِ أَوْ غَدْوَةٌ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا، وَلَقَابُ قَوْسِ أَحَدِكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ أَوْ مَوْضِعُ قِيدٍ
يَعْنِى سَوْطَهُ خَيْرٌ مِنَ
الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا، وَلَوْ أَنَّ امْرَأَةً مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ
اطَّلَعَتْ إِلَى أَهْلِ الأَرْضِ لأَضَاءَتْ مَا بَيْنَهُمَا
وَلَمَلأَتْهُ رِيحًا، وَلَنَصِيفُهَا عَلَى رَأْسِهَا خَيْرٌ مِنَ
الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا- ‘আল্লাহর পথে এক সকাল বা এক বিকালের জিহাদ পৃথিবী
ও তার মধ্যকার সকল বস্ত্ত হ’তে উত্তম। বেহেশতের মধ্যে তোমাদের কারো ধনুকের
পরিমাণ জায়গা অথবা চাবুক রাখার মত জান্নাতের জায়গা পৃথিবী ও উহার মধ্যকার
সকল বস্ত্ত হ’তে উত্তম। বেহেশতের কোন নারী যদি পৃথিবীর দিকে একবার উঁকি
দেয়, তবে তার সকল বস্ত্তকে আলোকিত করে দেবে এবং সুগন্ধময় করে তুলবে। আর
তাঁর মাথার ওড়না পৃথিবী ও উহার মধ্যকার সকল বস্ত্ত হ’তে উত্তম।[27]
৫. রাসূল (ছাঃ) আরো বলেছেন, مَنِ اغْبَرَّتْ قَدَمَاهُ فِى سَبِيلِ اللَّهِ حَرَّمَهُ اللَّهُ عَلَى النَّارِ ‘আল্লাহর পথে কোন বান্দার দু’টি পা যদি ধুলা মিশ্রিত হয়, তবে একে দোজখের আগুন কখনও স্পর্শ করবে না’।[28]
[1]. ইহসান ইলাহী যহীর, আল-কাদিয়ানিয়াহ : দিরাসাত ওয়া তাহলীল, পৃ. ১৯৯।
[2]. প্রাগুক্ত, পৃ. ১৯৫।
[3]. প্রাগুক্ত, পৃ. ২০৬।
[4]. প্রাগুক্ত, পৃ. ১৯৯।
[5]. প্রাগুক্ত, পৃ. ১৯৯-২০০।
[6]. তদেব ।
[7]. প্রাগুক্ত, পৃ. ২০১।
[8]. বুখারী হা/৩৪৪৮, ১৬০০; মুসলিম হা/১৫৫; বায়হাক্বী হ/১৮৩৯৫; মিশকাত হা/৫৫০৫।
[9]. মুসলিম হা/২৯৩৭, ১১০; তিরমিযী হা/২২৪০; আবুদাউদ হা/৪৩২১; ইবনু মাজাহ হা/৪০৭৫; মিশকাত হা/৫৫০৫।
[10]. মুসলিম হা/১২৫২; আহমাদ হা/৭২৭১।
[11]. আহমাদ হা/৯২৫৯, ৯৬৩০; ইবনু হিববান হা/৬৮১৪, ৬৮২১; মুসতাদরাকে হাকেম হা/৪১৬৩।
[12]. মিশকাত হা/৫৫০৮; হাদীছটি ইবনুল কাইয়্যিম আল-জাওযী (রহ.) তাঁর 'কিতাবুল ওফাতে' সংকলন করেছেন; ইমাম বুখারী মাওক্বূফ সূত্রে আব্দুল্লাহ ইবন সালাম থেকে 'ফীত তারীখিল কাবীর'-এ ১/২৬৩ পৃ.ু হাদীছটি উল্লেখ করেছেন; তিরমিযী হা/৩৬১৭। ইমাম তিরমিযী হাদীছটিকে হাসান গারীব বলেছেন। উল্লেখ্য যে, শায়খ নাছিরুদ্দীন আলবানী হাদীছটিকে যঈফ বলেছেন।
[13]. প্রাগুক্ত, পৃ. ২০৩ ।
[14]. প্রাগুক্ত, পৃ. ৩০২।
[15]. প্রাগুক্ত, পৃ. ১১৮।
[16]. তদেব ।
[17]. তদেব ।
[18]. তদেব ।
[19]. মুহাম্মাদ আলী লাহোরী কাদিয়ানী আধুনিক উচ্চ শিক্ষায় মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করে। অতঃপর উপযুক্ত কোন কাজ কর্ম না পেয়ে সে বেকার অবস্থায় দিন কাটাতে থাকে। অবশেষে সাম্রাজ্যবাদীরা তাকে শিকার করে নেয় এবং তার দ্বীন ঈমান ক্রয় করে তাদের এজেন্ট বিশ্বাসঘাতক ভন্ডনবী মিথ্যাবাদী কাদিয়ানীর নিকট সোপর্দ করে, যাতে সে তার সাথে মিলিত হয়ে একসঙ্গে কাজ করে এবং ইসলাম ধর্ম ধ্বংস করতে, মুসলমানদের ধর্ম বিশ্বাসে সন্দেহ সৃষ্টি করতে ও তাদের মধ্যে ফিৎনার বীজ বপন করতে তাকে সাহায্য করে। তার জন্য বড় অঙ্কের বেতন নির্ধারণ করা হয়। যার পরিমাণ ঐ সময়ে দুই শত টাকার অধিক ছিল। তখনকার দিনে কোন ব্যক্তি বেতন রূপে পঞ্চাশ টাকা পেলে তাকে আমীর বলে গণ্য করা হ’ত। উল্লেখ্য যে, গোলাম আহমাদ যে মুহাম্মাদ আলীর সর্দার ও নেতা ছিল সে তার নবুঅতের দাবীর পূর্বে মাসিক মাত্র পনেরো টাকা বেতনরূপে গ্রহণ করত। এত বড় অঙ্কের টাকা সে স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি। সুতরাং সে ভন্ডনবী কাদিয়ানীর সহিত মিলিত হয়ে ইসলামের ইমারতে ছিদ্র করার কাজে রত হয়ে পড়ল এবং মির্জার প্রয়োজনীয় ভিত্তিহীন ও বাতিল মতবাদ তাকে জোগান দিতে থাকে। এমনিভাবে তাকে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদীদের গুপ্তচররূপে তৈরী করা হ’ল। ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদীরা অত্যন্ত ধূর্ত ও বিপদজনক লোক ছিল। কেননা তারা গোলাম আহমাদের মাথায় নবুঅতের মুকুট পরানোর পর একথা অনুভব করল যে, তার পাশে আধুনিক ও অন্যান্য শিক্ষায় সুদক্ষ কিছু লোক জড় করা প্রয়োজন, যারা সাধারণ শিক্ষিত মুসলমানদের মধ্যে ফিৎনা ছড়াতে পারে। আর তাদেরই একজন ছিল মুহাম্মদ আলী। গোলাম আহমাদ সাম্রাজ্যবাদীদের ইঙ্গিতে তার জন্য একটি মাসিক ম্যাগাজিন ‘রিভিউ অব রিলিজিউন্স’ প্রকাশ করল। যার উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থী ও আধুনিক সংস্কৃতির অধিকারীদের মধ্যে ধ্বংসাত্মক চিন্তাধারা প্রচার করা। আর এটা তার হাতেই সোপর্দ করা হ'ল। কোন এক কাদিয়ানী লেখক উল্লেখ করেছে যে, ‘রিভিউ অব রিলিজিউন্স’ একটি মাসিক ম্যাগাজিন। মুকাদ্দাস (গোলাম) তার চিন্তাধারা ও শিক্ষা-দীক্ষা পৃথিবীতে ছড়াবার জন্য এটা প্রকাশ করেছেন। আর উস্তাদ মুহাম্মাদ আলী লাহোরীকে এর প্রধান সম্পাদক নিয়োগ করেছেন (মুহাম্মাদ ইসমাঈল কাদিয়ানীর ‘আন-নাজবাতু আলা আজবিবাতিত তাহাররিয়াতিস সাবিকা লি মুহাম্মদ আলী’ ৬৪ পৃ.), ইহসান ইলাহী যহীর, ‘আল-কাদিয়ানিয়্যাহ : দিরাসাত ওয়া তাহলীল’, পৃ. ২৪২।
[20]. প্রাগুক্ত, পৃ. ১১৯।
[21]. প্রাগুক্ত, পৃ. ১২১।
[22]. তদেব ।
[23]. তদেব ।
[24]. বুখারী হা/২৭৮৬, ৯৮৩; মুসলিম হা/১৮৮৮; তিরমিযী হা/১৬৬০; নাসাঈ হা/৩১০৫; ইবনু মাজাহ হা/৩৯৭৮; আবুদাউদ হা/২৪৮৫।
[25]. বুখারী হা/১৫১৯,সম্ভবত শায়েখ মমার্থ দেখে হাদীছটি চয়ন করেছেন। হাদীছটির পূর্ণ ইবারত হলো- عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ أَىُّ الْعَمَلِ أَفْضَلُ فَقَالَ إِيمَانٌ بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ. قِيلَ ثُمَّ مَاذَا قَالَ الْجِهَادُ فِى سَبِيلِ اللَّهِ. قِيلَ ثُمَّ مَاذَا قَالَ حَجٌّ مَبْرُورٌ- আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করীম (ছা.)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, সবোর্ত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। জিজ্ঞেস করা হলো, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা। জিজ্ঞেস করা হলো, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন, হজ্জ-ই মাবরূর বা মাকবূল হজ্জ (মুসলিম হা/৮৩)।
[26]. বুখারী হা/২৭৯০, ৯৮৬; মুসলিম হা/১৮৮৪; নাসাঈ হা/৩১৩২; আহমাদ হা/৮৪০০।
[27]. বুখারী হা/২৭৯৬; মুসলিম হা/১৮৮০; তিরমিযী হা/১৬৫১; ইবনু মাজাহ হা/২৭৫৭, ২৭৫৬, ২৭৫৫; আহমাদ হা/১০২৭৫।
[28]. বুখারী হা/২৮১১, ১০০৪; তিরমিযী হা/১৬২২; নাসাঈ হা/৩১১৬; আহমাদ হা/১৪৯৯০।